কেন এই ক্লিয়ারেন্স: বাংলাদেশ থেকে যদি কেউ জব নিয়ে দেশের বাইরে যেতে চায় তাহলে তাকে তার ভিসা এবং চাকুরির চুক্তিপত্র দেখিয়ে যাচাই করে এই ছাড়পত্রটা নিতে হয়। আপনি যে সঠিক কাগজপত্র নিয়ে চাকুরি করতে যাচ্ছেন সেটা যাচাই করে আপনাকে বর্হিগর্মন ছাড়পত্র এবং স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। প্রধানত আরব বিশ্ব এবং মালয়শিয়াতে যেতে ইচ্ছুক শ্রমিকদের জন্য এই সিস্টেম প্রবর্তন করা হলেও আইনি বাধ্যবাধকতার জন্য সকলের জন্যই এটা করতে হবে।
আপাত কিছুটা হয়রানী মনে হলেও এটার ভাল কিছু সুবিধাও রয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে একটি ইন্সুরেন্সও রয়েছে যা দেশের বাইরে চাকুরীজীবি মারা গেলে তার লাশ দেশে বিনামুল্যে আনার যাবতীয় খরচাদি বহন করবে। আইগত বাধ্যবাধকতার বিষয়টি এখানে উল্লেখ করা আছে। এই পোষ্টে কিভাবে এই ছাড়পত্র নিতে হয় তার বিস্তারিত উল্লেখ করবো।
আমি এই লেখাটা লিখবো যারা শ্রমিক নন কিন্তু মেধাভিত্তিক কাজের জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন তাদের জন্য। যারা শ্রমিক তাদের ট্রেনিংসহ অনেককিছু করতে হয় কিন্তু রা যারা ডাক্টার, ইঞ্জিনিয়ার বা অন্যন্য মেধাভিত্তিক পেশায় আছেন তাদের এসব লাগবে না।
সারা দেশেই এই কার্ড সংগ্রহের অফিস রয়েছে। ঢাকাতে এর অফিস পুরাতন এলিফ্যান্ট রোডে, প্রবাসী কল্যান ভবনে, ম্যাপে দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ঢাকার বাইরে ফিঙ্গারপ্রিন্ট কালেকশনের জন্য জেলাপর্যায়ে অফিস রয়েছে। সারা দেশব্যাপী এই অফিসের একটা তালিকা এবং যোগাযোগের তথ্যের একটা লিস্ট আমি সংগ্রহ করতে পেরেছি। এদের একটা ওয়েব সাইট আছে http://www.bmet.org.bd
ঢাকা জেলার বাইরে কিভাবে আগাতে হবে তা লোকাল অফিসে থেকে একটু কথা বলে নিলে ভাল হয়, ঢাকাতে কিভাবে করতে হবে সেটা আমি বলছি। উল্লেখ্য ঢাকার বাইরে কার্ড করা শান্তিপূর্ন না এবং অনেক দীর্ঘ সময় লাগে তারউপর তাদের না বোঝার কারনে ট্রেনিং করাতে চায় যা অপ্রয়োজনীয়, বিরক্তির এবং সময় নষ্টের কারন। নিয়ম অনুযায়ী আপনার পাসপোর্টে থাকা স্থায়ী ঠিকানাতে করতে হয়। কিন্তু ব্যাতিক্রম করানো অসম্ভব নয় ( ইউ নো বাংলাদেশ 😉 )। আপনি যদি ঢাকায় থেকে থাকেন তাহলে ঢাকার বাইরে থেকে করানোর চিন্তা না করাই ভাল। আমি নিজেই ঢাকা থেকে করিয়েছি যদিও আমার পাসপোর্টের ঠিকানা ঢাকার বাইরের যেখানে স্থানীয় অফিস আছে।
আমি. যখন যাই তখন এই ব্যাপারে জানা লোক পাওয়াই যাচ্ছিল না, নাম মনে নেই একজন মেসেজে আমাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে বলায় আমি কার্ড করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেই। ঢাকাস্থ অফিসে একদিন গিয়ে শুনে আসি প্রক্রিয়ার বিস্তারিত এবং পরদিন সকালে ৯:৩০ এর দিকে আমি অফিসে চলে যাই। সবাইকে সকালেই যাওয়ার পরামর্শ দিবো তাহলে কাজ দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। আপনার কাজ হল সেকেন্ড ফ্লোরে (মোটামুটি নিশ্চিত) উঠে হাতের বামে দরজা দিয়ে ঢুকে সামনের ONE STOP লিখা যায়গায় যাওয়া। ওখানে হালিমা বেগম নামে একজন বসেন। খুবই মিষ্টভাষী এবং নিবেদিতভাবে উনি আমার কাজ করে দিয়েছিলেন। উনার কাছে গিয়ে আপনার চাকুরির বিষয়ে বলুন এবং আপনার পাসপোর্ট এবং চাকুরির চুক্তিপত্র দেখান। যদি আপনার ঠিকানা ঢাকার বাইরে হয়ে থাকে তাহলে তাকে সেটা খুলে বলুন এবং সাহায্য চান আশাকরি উনি আপনার সমস্যার সমাধান করে দিবেন।
আমার সময়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ব্যাংকে টাকা জমা এবং শেষে ভিসা ভেরিফাইপূর্বক স্ট্যাম্পে সাইন করে পাসপোর্টে সিল এবং স্মার্টকার্ড দেয়া হয়েছিল। নীচতলায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং সম্ভবত দোতলায় ব্যাংকে টাকা জমা নেয়। কার্ড মুদ্রনও ও সরবারাহ নীচতলায় হয়। সবকিছু একটা ভবনেই হওয়াতে দৌড়াদৌড়ি কমই হয়। যতদুর মনে পরে ব্যাংকে ৪০০০ টাকার মত ইন্সুরেন্স আর কার্ড ফি ফি, স্ট্যাম্প বাবদ ৪০০-৫০০ টাকা লেগেছিল আমার। ঢাকার বাইরের কাজ এখানে করাতে যদি কোন স্পিডমানি লাগে সেটা আলাদা। সবকিছু শেষ হলে নীচের মত পাসপোর্টের উপরে একটা সিল দিয়ে দিবে যা ONE STOP Clearance বলে।
এর পর কার্ড মুদ্রনে যাবে যা নীচতলা থেকে সংগ্রহ করা যাবে, বিস্তারিত আপনাকে ওখান থেকেই জানিয়ে দেয়া হবে। নীচতলা থেকে কার্ড নিয়ে নিলে আপনার কাজ শেষ। কার্ডটি দেখতে নীচের মত।
এ বিষয়ে জানার জন্য এই ভিডিওটাও তথ্যবহুল।