ইতিহাস সমৃদ্ধ শহর বার্লিন ভ্রমন

গতবছর ২৮ জুলাই ইতিহাস সমৃদ্ধ শহর বার্লিন বেড়াতে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, বার্লিন আমার অত্যান্ত পছন্দের যায়গা। আমি আগে কখনো না গেলেও হিস্টোরিতে প্রচন্ড আগ্রহ থাকায় বার্লিন নিয়ে অনেক অনেক লেখা পড়েছি এবং ডকুমেন্টরি দেখেছি। দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীতে দুই সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল বার্লিন। জার্মানি আসার পর থেকেই বার্লিন যাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে থাকতো অবশেষে সুযোগ একদিন এসেই পরলো অফিসে একদিন ছুটি নিয়ে উইকেন্ডের দুই দিন মিলিয়ে ৩ দিনের একটি ট্যুর দিয়েই ফেললাম। ট্যুরের বিস্তারিত উল্লেখ করার চেষ্টা করবো আশাকরি।

বার্লিন পরিচিতি

আমরা অনেকেই রাজধানী বলতে মনেকরি রাষ্ট্রের সবকিছুই মনেহয় ওখানে, জার্মানির জন্য বিষয়টা প্রযোজ্য নয়। জার্মানি এদিক দিয়ে খুবই সুন্দর করে সাজানো সবকিছু একযায়গায় বসিয়ে ঢাকা বানিয়ে ফেলা হয়নি। বার্লিন জার্মানির সবথেকে বড় শহর এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে লন্ডনের পরই সবথেকে বেশি মানুষের বসবাস এখানে। বার্লিন জার্মানির ব্রান্ডেনবুর্গ প্রদেশের একটি শহর।

বার্লিনের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৩০০ খৃষ্টাব্দে, বার্লিন প্রথম রাজধানীর মর্যাদা পায় ১৪১৭ সালে Holy Roman Empire এর সময়ে। তখন এই স্টেটের নাম ছিল Margraviate of Brandenburg

বার্লিন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধের পর, তৎকালীন সোভিয়েন ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স জার্মানি দখল করে নেয়ার পর বার্লিন দুভাগে ভাগ করে এক অংশ সোভিয়েন ইউনিয়নের অধীন এবং বাকি অংশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের অধীনে চলে যায়। পরবর্তীতে দেয়াল (১৯৬১ – ১৯৮৯) উঠে যায় শহরের দু অংশের মাঝামাঝিতে। দু পাশেই একই দেশের লোকের বসবাস কিন্তু তাদের অধিকার ছিল না এক পাশ থেকে আরেকপাশে যাওয়ার। চিন্তা করুন তো আপনার নিজের দেশ আপনি এক অংশ থেকে অন্য অংশে যেতে পারবেন না কিন্তু একজন বিদেশী ঠিকই তা পারবে। এসবের প্রতিবাদ করায় এবং পূর্ব জার্মানি থেকে বের হবার চেষ্টা করায় গুলি খেয়ে মারা গেছে এমন লোকের সংখাও কম নয়।

The Berlin Wall (painted on the western side) was a barrier that divided the city from 1961 to 1989, উৎস: উইকিপিডিয়া

দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধের পর বার্লিন প্রায় পুরোপুরি ধংশপ্রাপ্ত হয়, প্রায় পুরো শহরের সবকিছুই ধংস হয়ে যায়। যদিও তারা সবকিছুই ঠিক আগের মত তৈরি করে ফেলেছে। সমস্ত ইতিহাস বিখ্যাত স্থাপনা থেকে শুরু করে সবকিছুই তারা আগের অবস্থায় নিয়ে ফেলেছে। নীচের ছবিটি বার্লিনের প্রাণকেন্দ্র পোষ্টডামার প্লাটসের ছবি।

Berlin in ruins after the Second World War (Potsdamer Platz, 1945), উৎস: উইকিপিডিয়া
Postdamer Platz এর বর্তমান ছবি

বার্লিন পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে একটি, বার্লিন বিখ্যাত কালচার, রাজনীতি বিজ্ঞানচর্চাসহ বিভিন্ন কারনে। পৃথিবীবিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন শিক্ষকতা করেছেন Humboldt University of Berlin এ। বার্লিনের ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক খুবই জটিল এবং বৃহৎ। কর্তৃপক্ষ জটিল সবকিছু সাজিয়ে রেখেছে যেন একবারে সঠিকভাবে।

বার্লিনে আছে অনেক বড় বড় হাইটেক ফার্ম, ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদি। বর্তমানে বার্লিন পুরো ইউরোপের সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আইটি শিল্পের জন্য একটি হাবে পরিনত হয়েছে। প্রচুর পরিমানে স্টার্টআপ কম্পানি এখানে ব্যাবসা করতে শুরু করেছে।

যাত্রা শুরু

প্রচন্ড উত্তেজনা নিয়ে ভোর বেলা রেল স্টেশনে চলে গেলাম, জার্মান ট্রেনে আগেও চড়েছি কিন্তু ICE ট্রেনে সেবারই প্রথম। লোকাল ট্রেনে ফ্রাঙ্কফুর্ট চলে গেলাম ওখান থেকেই আসল ট্রেনে উঠতে হবে।

যাত্রা শুরুর আগের ছবি

ট্রেনের জার্নি অনেক আনন্দময় ছিল, প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার মাত্র সারে চার ঘন্টা সময় নিল পৌছুতে, আসলে ট্রেনের সক্ষমতা আরও ভাল কিন্তু শুনেছি বিভিন্ন কারনে বেশি জোরে চালানো হয় না। ট্রেনে ওয়াইফাই সুবিধা আছে এবং ভেতরটা অনেক সাইলেন্ট। সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার/ঘন্টার মত

বার্লিনে পৌছে

সারে চার ঘন্টার জার্নি হলেও ঝাঁকি না থাকা এবং যথেষ্ট আরামদায়ক ভ্রমন হওয়াতে একমই ক্লান্ত ছিলাম না। বার্লিন স্টেশনটা দেখতে অনেকটা হটডগের মত। মারাত্বক ব্যাস্ত এবং খুবই সাজানো গোছানো রেল স্টেশন এটা। নেমেই আগে ম্যাকডোনাল্ড খুজে বের করলাম, পেটে কিছু দানাপানি দিয়ে তারপর যা করার করবো এই চিন্তায়।

বার্লিন প্রধান রেলওয়ে স্টেশন
স্টেশনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী এবং মনমুগ্ধকর দৃশ্য

বার্লিনের ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম

অন্যান্য বড় শহরের মত বার্লিনের পাবলিক ট্রান্সপোর্টগুলো ট্রেন, ট্রাম, বাস এবং মেট্রো রেল। সবকিছুই খুবই ম্যাসিভ এবং জটিল। প্রচুর জনসংখার শহরে ভাল ট্রান্সপোর্টের সুবিধা থাকা জরুরী এবং তারা খুবই যত্ন নিয়ে সবকিছু সাজিয়ে রেখেছে। এতকিছুর পরও কয়েকবার হারিয়ে গিয়েছি এবং ভূল হয়েছে। গুগল ম্যাপ খুবই ভাল সার্ভিস দেয় বার্লিনে। প্রতিটি বাস ট্রেন ইত্যাদির সময় সবকিছুই গুগল ম্যাপে পাওয়া যায় এমনকি যখন মেট্রোরেলে U Bahn এ করে কোথাও যাচ্ছি কিন্তু মাটির নিচ দিয়ে যাওয়ার ফলে জিপিএস, ইন্টার্নেট সবকিছু সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে তখনও গুগল ম্যাপ একবারে সঠিক সার্ভিস দিচ্ছিল। কোন স্টেশনে এসেছি, নামার প্রস্তুতি নিতে বলা ইত্যাদি সময়মত বলে দেয়াটা সত্যিই আমাকে আবিভূত করেছিল। এসবই সম্ভব হয়েছে এদের পাবলিক ট্রান্সপোর্টের কঠোর সময়নুবর্তিতার ফলে। আপনি যদি জার্মানিতে প্রথম আসতে চান তাহলে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যাবহারের জন্য এই পোষ্টের “ট্র্যান্সপোর্ট সিস্টেম” প্যারা লক্ষ্য করুন।

Reichstag Building

বার্লিনে নামার পর প্রথম যে স্থান ভ্রমন করি তা হল রাইশটাগ ভবন। এটি জার্মানির আগের সংসদ ভবন এবং খুবই বিখ্যাত একটি স্থাপনা। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ভেতরে প্রবেশ করার এবং ছাদে যাওয়ার। স্থাপত্যবিদ্যার অনন্য এক নিদর্শন এই ভবনটি, ১৮৯৪ – ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত এটি জার্মান এম্পায়ারের পার্লামেন্ট ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় যা পরে সারিয়ে তোলা হলেও সম্পূর্ন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয় ডয়েশেন আইনহাইট বা জার্মান রিইউনিফিকেশন এর পর। বর্তমানে এটার বাইরের অংশ এবং ভেতরের আংশিক সবার জন্য উন্মুক্ত। তবে ভেতরে ঢুকতে চাইলে আগে থেকে রেজিস্টার করে যেতে হবে বা ভবনের পাশে থাকা রেজিস্ট্রেশন বুথ থেকে রেজিস্ট্রেশন করে ঢুকতে হবে। তবে সাধারনতো রেজিস্ট্রেশনের সাথে সাথে ঢুকতে পারা সম্ভব না। আমি যেদিন যাই সেদিন রেজিস্ট্রেশন করে রেখেছিলাম এবং পরদিন সকালে পরিদর্শনের অনুমতি পেয়েছিলাম

১৯৩২ সালের ছবি, উৎস: উইকিপিডিয়া
যুদ্ধবিদ্ধস্ত অবস্থায়, ছবিঃ উইকিপিডিয়া
বর্তমান অবস্থা, ১৯৯৮ সালে পরিপূর্ন সারিয়ে তোলার পর
রাতেরবেলা দেখতে যেন অন্যরুপ, উৎস: উইকিপিডিয়া

নীচের ভিডিওটি আমার ফোন থেকে করা কিছু ভিডিও থেকে বানানো।

বার্লিন এসে এই ভবনে প্রবেশ না করা একটা বড় মিস। এই ভবনের উপরে থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ন অংশের অনেকখানিই দেখা যায়, উপরের ছবিতে থাকা ভবনের উপরের কাঁচের অংশটুকু দেখতে ছোট মনে হলেও আসলে তা অনেক বড়, গোলাকার একটা দীর্ঘ পথ দিয়ে ঘুরে ঘুরে আপনি ভবনটির ছাদে আসতে পারবেন। কাঁচের ওই অংশে ঢুকার আগে আপনি চাইলে একটি রেডিও ডিভাইস নিতে পারবেন ফ্রিতে যা আপনাকে লাইভ বর্ননা দিবে ভবনটির এবং আপনি শহরের যে অংশ চোখের সামনে দেখছেন সেটার। ডিজিটাল গাইডের মত সবকিছু বর্ননা করতে থাকবে ডিভাইসটি, পাশাপাশি কিছু ডকুমেন্ট, ম্যাপও ফ্রিতেই পাবেন যেগুলোতে উল্লেখযোগ্য ছবি এবং ইতিহাস থাকবে। ভ্রমন থেকে শুরু করে সবকিছুই ফ্রিতে যেটা খুবই আকর্ষনীয়। জার্মান সরকার চাইলেই এখানে জনপ্রতি ২০ ইউরো চার্জ রাখতেই পারতো কিন্তু ওরা মনেহয় এসব ছোটখাট জিনিস নিয়ে মাথা ঘামায় না। যে পরিমান ম্যানপাওয়ার আছে এই ভবনটি ম্যানেজ করার জন্য তা চিন্তাও করতে পারবেন না, ভেতরে প্রবেশের আগে ঠিক এয়ারপোর্টের মত চেকিং করে। সহজেই বুঝা যায় জার্মান সরকার তাদের ইতিহাসকে ঠিক কতটা যত্ন নিয়ে সংরক্ষন করে।

ব্রান্ডেনবুর্গার টর

এটি মুলত একটি গেট, লন্ডন গেট, দিল্লী গেটের মত। ১৮০০ সেঞ্চুরীতে ব্রান্ডেনবুর্গের শাসক দ্বীতিয় ফ্রেডেরিক উইলিয়াম এর সময়ে তৈরি হয় এই গেটটি। এটা জার্মানির সবথেকে উল্লেখযোগ্য ল্যান্ডমার্কগুলোর একটি। দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন বার্লিন ভাগ হয়ে যায় তখন এই গেটের দুপাশেই বিখ্যাত বার্লিন প্রাচীর জোড়া লেগে যায়। বার্লিন প্রাচীরের পতন হবার পরে এই গেটটি বৃহত্তর জার্মানির একত্রীকরনের প্রতীক হিসেবে সবার সামনে উপস্থিত হয়। এখন যে গেটটি আছে সেটি আগের গেট নয়, এটি পুনঃনির্মান করা হয়েছে যা আগের থেকে আকারে বেশ বড়।

প্রচুর লোকসমাগম হয় এখানেও, বার্লিনের দর্শনীয় জিনিসগুলোর মধ্যে প্রথম পাঁচে থাকবে এই গেটটি।

রাতের ছবি, উৎস: উইকিপিডিয়া

বার্লিন প্রাচীর

চীনের দুঃখ হোয়াংহো নদী, ছোটবেলায় আমরা সবাই পড়েছিলাম, তেমনি জার্মানির একসময়ের দুঃখ ছিল এই বার্লিন প্রাচীর। একটি দেশ একটি জাতি কিন্তু তারা তাদের দেশের অপর পাশে যেতে পারবে না কিন্তু অন্যদেশের নাগরিকরা ঠিকই যেতে পারবে। বুঝতেই পারছেন দুঃখটা কতটা বড়। প্রাচীর তৈরি হতে হতে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দিয়ে, বাবা ছেলের মধ্যে বিভেদ করে দাড়িয়ে গিয়েছিল গিয়েছিল। পরিবার, বন্ধুবান্ধব পাড়াপ্রতিবেশীদের এমনকি বিভিন্ন বিল্ডিংকেও আলাদা করে দিয়ে দুই যুগেরও বেশি দাড়িয়ে ছিল জার্মানদের দুঃখ হয়ে। শতাধিক মানুষ দেয়ার পার হতে গিয়ে নির্মমভাবে গুলি খেয়ে মৃত্যুবরন করেন এর মধ্যে মনেহয় সবথেকে নির্মম এবং যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যুর ঘটনা ছিল Peter Fechter এর।

Peter Fechter ২৭ নম্বর মৃত্যুপথযাত্রী যিনি বার্লিন প্রাচীর পার হতে গিয়ে মারা যান। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি কোন প্রকার সতর্কবার্তা দেয়া ব্যাতিরেকে দেয়াল পার হবার সময় সোভিয়েত নিয়ন্ত্রিত পূর্ব জার্মানীর কোন একজন গার্ড তাকে গুলি করে। গুলি খেয়ে পিটার পরে ছিল সোভিয়েত নিয়ন্ত্রিত অংশে, প্রায় ১ ঘন্টা কাতরানোর পরও কেউ তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে নি। নির্মমভাবে কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যুবরন করে ছেলেটি।

পড়ে আছে পিটারের লাশ
Peter Fechter memorial and wreath on the western side of the Berlin Wall, taken in 1984
Memorial to Peter Fechter on Zimmerstraße, in German reads “…he just wanted freedom.”
দেয়াল পাড় হতে গিয়ে মৃত্যুবরন করা নিরীহ মানুষদের স্বরনে তৈরি করা একটি মেমোরিয়াল
দেয়ালের বাম পাশে সোভিয়েত নিয়ন্ত্রিত অংশ, ভালমত নজরদারী করার জন্য একটি বড় অংশ ফাঁকা রাখা হয়েছিল, অপরপাশে আমেরিকা, বৃটেন এবং ফ্রান্স নিয়ন্ত্রিত অংশ, প্রতিবাদ করে এপাশে শিল্পীরা গ্রাফিটি আঁকতো যে সংস্কৃতি এখনো চলমান।

দেয়ালটি যে প্রথমেই এত বড় এবং ভয়ংকর ছিল তা কিন্তু না, প্রথমে খুবই ছোট একটি দেয়াল বানানো হয় যাকে প্রথম প্রজন্মের দেয়াল বলা হয়ে থাকে, তখন মানুষজন খুব সহজেই পার হয়ে যেত, জোরে গাড়ি চালিয়ে দেয়াল ভেঙ্গে পার হয়ে গিয়েছে এরকমও ঘটেছে অনেকবার। এরপর থেকে ধীরে ধীরে দেয়ালগুলোকে মজবুত করা হয়। চতুর্থ প্রজন্মের দেয়াল প্রায় পার হবার অযোগ্য ছিল, নীচের ইনফোগ্রাফিকে ৪ প্রজন্মের দেয়ালের বিবরন তুলে ধরা হয়েছে। দেয়াল সম্পর্কে আরও জানার জন্য এই ডকুমেন্টরিটি দেখতে পারেন।

By This image has been created during “DensityDesign Integrated Course Final Synthesis Studio” at Polytechnic University of Milan, organized by DensityDesign Research Lab in 2015. Image is released under CC-BY-SA licence. Attribution goes to “Sara Perozzi, DensityDesign Research Lab”. – Own work, CC BY-SA 4.0, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=37083547
Full Image
Checkpoint Charley এর সামনে আমি, এখান থেকেই বর্ডার পার করে দেয়ালের অপর পার্শ্বে যেতে হত
প্রায় পুরো দেয়ালটুকু ভেঙ্গে ফেলা হলেও, চিহ্ন রেখে দেয়া হয়েছে এভাবেই

চেকপয়েন্ট চার্লির পাশের ওয়াল নিয়ে আমার বানানো ছোট একটি ভিডিও

মিউজিয়াম আইল্যান্ড

মিউজিয়াম আইল্যান্ড খুবই টুরিস্টিক জায়গা। এখানে দৃষ্টিনন্দন একটি ক্যাথেড্রালসহ কিছু মিউজিয়াম আছে। মিউজিয়ামগুলোর ভেতরে ঘুরে দেখার সুযোগ ছিলনা অল্প সময়ের জন্য। এখানে বেড়াতে আসলে আইল্যান্ডের পাশের নদীতে ভ্রমনের সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত না। প্রতিটি ভবনের নির্মানশৈলী খুবই অবাক করার মত যা কাছে থেকে না দেখলে অনুধাবন করা যায় না। ক্যাথেড্রালের সামনে আমরা বেশ কয়েকজন গিয়েছিলাম, তার কিছু ছবি নিচে দিলাম।

বার্লিন ক্যাথেড্রাল
একটি মিউজিয়াম
মাত্র বিয়ে শেষ করে কপোত কপোতি বের হয়ে আসলো ক্যাথেড্রাল থেকে
ক্যাথেড্রালের সামনে আমি

আমার ধারন করা মিউজিয়াম আইল্যান্ডের একটি ভিডিও

Berliner Flaktürm / Flak tower

ছোট একটি পাহারের উপরে অবস্থিত এই যায়গা। হেটেই উপরে উঠা যায়, পুরো জার্মানিতে এরকম টাওয়ার ছিল ৮টি। এলাইড এয়ারফোর্সের আক্রমন প্রতিহত করার জন্য এগুলো তৈরি করা হয় ১৯৪০ সালে হিটলারের নির্দেশের পরে। এগুলা বিমান হামলা সামাল দেয়ার পাশাপাশি শহরের মানুষদের আশ্রয় দেয়ার জন্যও ব্যবহার হত। এখানে নাৎসি বাহীনির ভারী ভারী বিমান বিদ্ধংসী কামান ছিল। দশ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেয়া সহ একটি হাসপাতালও ছিল সেখানে।

বর্তমান ফ্লাক টাওয়ার, ছবি উইকিপিডিয়া
এরকমই ভারী ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ছিল এই টাওয়ার
টাওয়ারের উপরে আমি

সবশেষে আলবার্ট আইন্সটাইনের শিক্ষকতা করা হামবোল্ট ইউনিভার্সিটির একটি ছবি দিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করছি, পরবর্তীতে আবার কোন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করবো ইনশাআল্লাহ্।

হামবোল্ট ইউনিভির্সিটির সামনের অংশে আলবার্ট আইনস্টাইনের স্ট্যাচু