সামনে পরীক্ষা আর আমি কিনা ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। সারাদিন কম্পু গুতাই আর মটরসাইকেল নিয়া ঘুইড়া বেড়াই। এলাকায় আমার ব্যাপক সুনাম(নাকি দুর্নাম ) আমি নাকি প্রচুর স্পিডে ড্রাইভ করি। মটর সাইকেলও একপিস ডায়াং ১২৫, ব্যাটার যা শব্দ। তারউপর এটার সাইলেন্সারে একটু কারিশমা ফলাইছিলাম যার ফলে সাউন্ডটা রকেটের আওয়াজে রুপান্তরিত হয়েছে। বন্ধুর বাবার মতে আমি নাকি রকেট চালাই। কাউরে পেছনে বসায়া ভয়ংকর সব টার্নিং নিয়া পেছনের পাবলিককে ভয় ধরায়া দিতে আমার যে খুব ভাল লাগে। আর টার্নিং এর সময়ই দেখা যায় বন্ধুর বাবা আর নাহয় আমার বাবার বন্ধু সোজা বাড়িতে নালিশ। যাহোক বকবক অনেক হয়েছে।
আমি একটা ছাত্রও বটে পরীক্ষার আগে সাজেশন আর প্রাইভেট ব্যাপক ব্যস্ত হয়া যাই, সাইফ দি বস এর মতে আমি হলাম চালাক এবং জেট বিমান জাতীয় ছাত্র। তো এখন কি করা দরকার প্রাইভেট পড়া দরকার সামনে যে পরীক্ষা, কলেজে ক্লাসও যে করি নাই। দিনে ২ বেলা করে এডওয়ার্ডে আড্ডা দিয়েছি। তো নিলাম প্রাইভেট সকাল ৮ টার দিকে যাইতাম পড়তে।
কোন একদিন
শীতের সকাল কুয়াশাও দেখা যায়, আকাশটা দেখে ভাবতেছি দিনটা কেমন যাবে আম্মুর সাথে খাওয়া নিয়া বাগড়া বাধানো আমার পুরাতন অভ্যাস। কি কারনে যেন খাওয়া পছন্দ হয় নাই। রাগ করে একটা ডিম সেদ্ধ করে খালি পেটে খেয়েই চললাম কলেজে। মটর সাইকেলটা নিলাম না বিশ্বরোডে দুদিন না চালিয়ে যদি বাবার মনটা একটু পাওয়া যায় আপনারাই বলেন একজন পুরোদস্তুর রাইডার এর জন্য সক্কালবেলা হল উপযুক্ত সময়, রোড ফাকা থাকে, এসময় ৯০-১০০ কিমি তো চালানোর মজাই আলাদা।
যাহোক প্রাইভেটে স্যার আসলো দেরী করে। পড়া হল এবার বাড়ি যাব, স্থান জনৈক রাস্তার মোর দাড়িয়ে আছি সিএনজি(আপনারা যারা ঢাকায় থাকেন তারা এই যানবহনকে লেগুনা বলেন) ধরব বলে। কেন যে গাড়িগুলা ঠিকমত আসে না এত কেন অপেক্ষা করতে হবে! রাস্তা দিয়ে দেখি একটা মেয়ে আসছে এরকম গ্রামে এত সুন্দর স্মার্ট মেয়ে দেখে আমার একটু অবাকই লাগল, কিন্তু ঘড়িতে ১০ টা বাজলেও খিদেয় পেটের ১২ টা পার হয়ে গেছে তাই বেশি একটা নজর দিলাম না, এদিকে গাড়ি যেহেতু নাই তাই একটু ওদিকেই তাকিয়ে থাকি , যাহোক দেখলাম সুন্দর চেহারার একটি মেয়ে গার্লস স্কুলের ড্রেস পরিহিত, দুটো বেনিযুক্ত চুল, মাথার সামনে একটু চুল এনে ডিজাইন করা। সাথে একটু ছোট ছেলে ভাবলাম ছোট ভাই হবে। পিচ্চিটা হালকা লম্ফঝম্প দিতেছে। আমি তখন জ্যাকেট পরিহিত। কানে তো অলওয়েজ হেডফোন গান বাজতেছে লাভ সং এভারগ্রীন অ্যালবাম এর। শীতে হাত কিছুতেই আমি বাইরে রাখতে রাজি না এদিকে পেটের বারোটা তাই চেহাড়ায় কোন নমনীয়তার সুর নেই, দুটো হাত পকেটে গুজেঁ মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে। আমার মনে কোন ইমোশন নাই দায়িত্বপালন করতেছি আরকি এরকম ভাব। আমাকে পাস করে চলে গেল মেয়েটি। আমি আবার গাড়ি খুজতে লাগলাম। মনে হল একবার দেখি না পেছনে তাকিয়ে, না না তোমার তো প্রেম ভালবাসার প্রতি আগ্রহ থাকার কথা না তুমি হলা একটা যান্ত্রিক মানুষ এসব ফালতু কামে তোমার আগ্রহ থাকার কোন মানেই হয় না। আরে বাবা আমিকি প্রেম করব নাকি? এমনি দেখব আরকি। তাইলে তাকাও তাকাইলাম, কট খাইছি মাইয়াও দেখি ঠিক সময়মত তাকাইছে আমার দিকে দুজনেই কট। তারাতারি উভয়ই উভয়কে সামলে নিলাম। ধুর ক্যান যে তাকাইলাম ওয়েটটাই আর থাকল না
সিএনজি চলে এসেছে, আমি আর দেরি করলাম না উঠে পরলাম। কিছু তো একটা করতে হবে গানগুলা কেন যেন ভাল লাগতেছে না। কিছুদিন হল একটা নাটক দেখছিলাম নাম হল এক্স ফ্যাক্টর, প্রথম দর্শনে প্রেম এর কথাটা মাথায় আইল। মাথার মধ্যে এটাই ঘুরতে লাগল। ধুর আর থাকা গেল না।
ফোন দিলাম বন্ধুরে
আমিঃ যেখানেই থাক ২০ মিনিটের মধ্যে রেডি হও একযায়গায় যেতে হবে বন্ধুঃ কোথায় ?
আমিঃ যেখানেই হোক আমি বাইক নিয়া হাজির হচ্ছি। বন্ধুঃ আমিতো এখনও ঘুমাইতেছি খাইনাই।
আমিঃ আমি অতশত জানি না আমি তোমার বাসায় আসতছি, গেট রেডি! বন্ধুঃ আচ্ছা ঠিক আছে!!
বাসায় আসলাম হাপুর হুপুর খাইলাম বাইকটা বের করলাম এবং বন্ধুকে তুলে নিয়ে ১০ কিমি জার্নির জন্য রোডে উঠলাম, মিটারের কাঁটা ৮০ তে স্থির হল পুরা চ্যালেঞ্জ নিবিনা সালা