সালটা সম্ভবত ২০০১ তখন ক্লাস ফাইভে পরি, একটা মেয়ে খুব জ্বালাইতো, ক্লাসে খোচাখুচি থেকে শুরু করে সবখানেই। নাম রিমা, পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলায় থাকি তখন, আব্বু তখন বড়ালব্রীজ শাখা অগ্রনীব্যংকের ম্যানেজার। মেয়েরা ছেলেদের থেকে একটু দ্রুতই ম্যাচিরউর হয়, বোকা আমি কিছুতেই পেরে উঠতাম না, একদিন ছোট ভাইকে নিয়ে ওদের স্কুলে (তখন ক্লাস সিক্সে এবং আমি বয়েজ স্কুলে এবং সে গার্লস স্কুলে) গেলাম ম্যাজিক শো দেখতে, আমাকে একা পেয়ে গালে একটা কষে থাপ্পর দিয়ে দৌড়িয়ে পালিয়ে গেল, আমি গালে হাত দিয়ে হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে থাকলাম
যথারীতি বন্ধুদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলাম উল্টা তারা আমাকে নিয়ে অনেক হাসাহাসি করতে লাগলো আমার জেদ চেপে গেল, ওদিনই বিকেলে খেলছিলাম মাঠে, দেখি ও যাচ্ছে প্রাইভেট পড়ে। আর কই যাবে দৌড়ে গিয়ে কিল ঘুষি মেরে আমার মতই শুকনা (আমি আগে থেকেই শুকনা আরকি) মেয়েটার হারহাড্ডি গুরো করে দেয়ার মত অবস্থা। বেচারা মাঠের মধ্যে কেঁদেই ফেললো আমি আর কিছু না বলে মাঠের মাঝখানে চলে আসলাম। বন্ধুরা ঘটনার আকস্মিকতা সহ্য করার পর আমাকে বললো পালাই যাইতে। আমি বললাম বিনা কারনে মারি নাই যাবো না। খেলা ভন্ডুল হয়ে গেল। মেয়েটা কাদতে কাদতে বাড়ি চলে গেল। একটু চিন্তা হল যে যদি তার বাড়িতে বলে দেয় কিন্তু আমার মেজাজ সেরকম গরম ছিল, হাজার হলেও এতগুলা মেয়ের মধ্যে চর মেরেছে। এলাকার লোকজনও হতভম্ব হয়ে গেল কিন্তু কিছু বললো না কেউ হয়তো ভেবেই পাচ্ছে না শান্তশিষ্ট পোলাপানগুলার আজ হলটা কি!
আজ অনেকদিন পর পুরাতন বন্ধুদের কথা মনে পরছে, বসে বসে পুরাতন দিনগুলোর কথা ভাবছি, কতইনা মধুর ছিল সে দিনগুলো, আব্বুর শাসন বাদ দিলে সবকিছুই রঙ্গিন ছিল, এখনকার শহরের ছেলে মেয়েরা ওরকম দিন শুধু স্বপ্নেই ভাবতে পারবে। ভাঙ্গুরা থাকতে আসলেই অনেক মজা করেছি, নৌকা করে নদী পার হয়ে টাকা না দিয়ে পালাইছি, রাস্তা দিয়ে ভ্যান যাচ্ছে দৌড়ে উঠে বসে থেকেছি আবার যেই ভ্যানচালক টের পেয়ে গেছে সাথে সাথে দৌড়ে পলায়ন, মাঠে বসে বসে কাচা ধানের শিশ চাবিয়েছি আরও কতকি
বেশকিছুদিন আগে ভাঙ্গুরার এক পুরোনো বন্ধুর সাথে দেখা হয়েছিল, ওর কাছেই শুনলাম রিমার একটা মেয়ে হয়েছে এতদিনে স্কুলে যাওয়ার কথা , একটা ফোন নম্বর ছিল কথা বলা হয় নাই কোনদিন সেটা দিয়ে, ওটাও হারিয়ে ফেলেছি, থাকলে হয়তোবা পিচ্চির সাথে কথা বলা যেত
ফিলিংস লাইক বুড়া হয়ে গেলাম নাকি ….